Header Ads Widget

Responsive Advertisement

শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা, সাগরে পানির তাপমাত্রা বেশি


আসন্ন ঘূর্ণিঝড়টি বেশ শক্তিশালী হতে পারে, কারণ বঙ্গোপসাগরের যে স্থানে ঘূর্ণিঝড়টির উৎপত্তি হতে যাচ্ছে সেখানে পানির উপরের দিকের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। সাধারণত সাগরে পানির তাপমাত্রা ২৭ থেকে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলেই লঘুচাপের সৃষ্টি হয়ে থাকে। কিন্তু যেখানে লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে বা পরে যেখানে আসন্ন ঘূর্ণিঝড়টির সৃষ্টি হতে যাচ্ছে সেখানে পানির বর্তমান সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, সেখানে গড় তাপমাত্রা থাকছে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


মে মাসের শেষ দিকে অতীতে যত ঘূর্ণিঝড় বঙ্গোপসাগরে হয়েছে সেগুলো শক্তিশালী হতে সাগরপৃষ্ঠের উচ্চ তাপমাত্রা যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছে। যেমন ২০২০ সালে মে মাসে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় আমফান এভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। এটা ছিল একটি সুপার সাইক্লোন বা অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়। সর্বোচ্চ পর্যায়ে মাত্র তিন মিনিটের জন্য এর সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ২৪০ কিলোমিটার। আমফান বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূলে আঘাত হানে। আমফান যখন বঙ্গোপসাগরে খুব সক্রিয় ছিল, তখন এর উৎপত্তিস্থল বা যেখানে ঘুরছিল সেখানকার তাপমাত্রা ছিল ৩২ থেকে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অবশ্য ঘূর্ণিঝড়কে শক্তিশালী হতে ঘূর্ণন গতি পথে কত বেশি আর্দ্রতা জমে তার ওপর নির্ভর করে।


বঙ্গোপসাগরে আসন্ন ঘূর্ণিঝড়টির আগের প্রক্রিয়া লঘুচাপটি সম্বন্ধে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং এর সংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপটি সৃষ্টি হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির প্রাথমিক স্তরের নাম লঘুচাপ। এরপর আরো চারটি স্তর অতিক্রম করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে থাকে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েই এটি আরো ঘনীভূত হতে থাকবে বলে আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।


এদিকে আজ মঙ্গলবার দেশের কোথাও তাপপ্রবাহ থাকছে না। উপরন্তু রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এখন থেকে সামনের ঘূর্ণিঝড় শেষ না হওয়া পর্যন্ত দেশে তাপমাত্রা না বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ এর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাবে সারা দেশেই বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


আজ রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা ও ঝড়োহাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টি হতে পারে।


গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল মংলায় ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন সৈয়দপুরে ২০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৩.৪ ও ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এর আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশের প্রায় সর্বত্রই কম-বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে পটুয়াখালীতে ১২১ মিলিমিটার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে সৈয়দপুরে ৬৪ মিলিমিটার।


২ ঘণ্টার বৃষ্টিতে বরিশালে জলাবদ্ধতা

বরিশাল ব্যুরো জানায়, বরিশালে টানা দুই ঘণ্টার বৃষ্টিতে নগরীর অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ সড়কে হাঁটুপানি জমেছে। সোমবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত টানা দুই ঘণ্টার বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরে এলেও ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। বৃষ্টির কারণে এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ বেড়েছে।


সরেজমিন দেখা যায়, নগরের পলাশপুর, হাটখোলা সড়ক, অক্সফোর্ড মিশন রোড, বিএম স্কুল লেন, নথুল্লাবাদ থেকে মধুমিয়ার পুল হয়ে মড়কখোলার পুল পর্যন্ত সড়ক, কাউনিয়া হাউজিং সংলগ্ন সড়ক ও থানার গলিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এছাড়া শ্রীনাথ চ্যাটার্জী লেন, টিয়াখালি সড়ক, নিউ সার্কুলার রোড, সাগরদী জিয়ানগর, গোরস্থান রোড, নবগ্রাম রোড, কলেজ রোড, আমির কুটির সড়ক এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।


নগরীর প্যারারা রোডের বাসিন্দা আলামিন বলেন, সামনে বর্ষার মৌসুম এখনই যদি নগরীর ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না করা হয় তাহলে সামনের দিনগুলোতে নগরবাসীর ভোগান্তি চরমে পৌঁছাবে। অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

গবেষক আনিসুর রহমান খান বলেন, নগরীর অধিকাংশ সড়কের পাশে ড্রেন না থাকার কারণে বৃষ্টির পানি রাস্তায় জমছে। পাশাপাশি নগরীর খালগুলোতে নাব্যতাসঙ্কট থাকায় বৃষ্টির পানি খাল থেকে নদীতে নামতে পারছে না। তাই সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের জন্য খাল পরিষ্কার জরুরি হয়ে পড়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ